নিজস্ব প্রতিবেদক:
সন্দীপ থেকে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতে পতেঙ্গায় এসে নিখোঁজ জিডি করেও ব্যর্থ নাটকের রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন পুলিশ!
গত বৃহস্পতিবার (৪ মে) অপহৃত যুবক বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়।
মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, গত ১ মে উড়িরচর সন্দীপ থেকে বোট নিয়ে মালামাল নেওয়ার জন্য পতেঙ্গা থানাধীন ১৫ নম্বর ঘাটে এসে ভিকটিম দেলোয়ার হোসেন দিপ্তী (৩৭) নিখোঁজ হন। এ সংক্রান্তে ভিকটিম এর ভাই আলতাফ হোসেন পতেঙ্গা থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রী করেন এবং সিএমপি ডিবি বন্দর অফিসে এসে নিখোঁজ সংক্রান্তে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। এ সংক্রান্তে ডিবি ( বন্দর- পশ্চিম) বিভাগের স্পেশাল টিম তদন্ত শুরু করার এক পর্যায়ে সিসি টিভি ফুটেজে ঘটনার দিন ১৫ নম্বর ঘাটে ভিকটিম কে দেখতে পায় এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইপিজেড এলাকায় এসে ভিকটিম এর মোবাইলটি বন্ধ হয়ে যায় মর্মে জানতে পারে।
বিরতিহীন তদন্ত চলাছিল। সকল পুলিশি কৌশল প্রয়োগ করেও ভিকটিমের কোন হদিস বের করা যাচ্ছিলো না। এমন পর্যায়ে জানা যায় ভিকটিম দেলোয়ার হোসেন দিপ্তী (৩৭) গত ০৪/৫/২০২৩ইং তারিখ নিজ বাড়ীতে হাজির হয়েছে এবং বাড়ীর লোকজনের কাছে ঘটনার দিন অজ্ঞাতনামা লোকজন তাকে অপহরন করে তাহার সাথে থাকা ১৫০০০০০/= ( পনের লক্ষ) টাকা নিয়ে চোখ বেঁধে ফেনী জেলার মহিপাল এলাকায় ফেলে গেছে মর্মে জানায়।
পরবর্তীতে ঘটনাটির রহস্য উদঘাটন এবং অপহরণকারীদের সনাক্ত করার লক্ষ্যে ভিকটিমকে ডিবি অফিসে ডাকা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমদিকে সে ঘটনাটিকে অপহরণ বলে বর্ণনা দেয়। কিন্তু বর্ণনায় অসামঞ্জস্যতা এবং তথ্যের গড়মিল দেখা দিলে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ভিকটিম স্বীকার করে যে অপহরণের কোন ঘটনা ঘটেনি এবং বিভিন্ন ব্যক্তির ১৫০০০০০/=(পনের লক্ষ) টাকা আত্মসাৎ করার জন্য সে অপহরণের নাটক সাজায়।
ভিকটিমের দেয়া বর্ণনায় জানা যায়, সে গত ০১/০৫/২০২৩ ইং তারিখ উড়িরচর, সন্দ্বীপ হতে বোটে করে পতেঙ্গায় আসে। ১৫ লক্ষ টাকা আত্মসাতের পরিকল্পনা সে উড়িরচর থাকতেই করে এবং প্রায় ০৬ লক্ষ টাকা তার আত্মীয়স্বজনদের বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে প্রদান করে। তার বাড়িতে ০৩ লক্ষ টাকা নগদ রেখে দেয়। পতেঙ্গায় সে ২.৫ লক্ষ টাকা নিয়ে আসে। ০৫ লক্ষ টাকা সে হারিয়ে ফেলে বলে জানায়। অপহরন নাটকটি কার্যকর করার লক্ষ্যে ইপিজেড এলাকায় তার ব্যবহৃত মোবাইলটি ফেলে দিয়ে, বিভিন্ন গাড়ি পাল্টিয়ে ফেনী চলে যায়। সেখানে সে ০২ দিন একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে নিজ এলাকায় চলে যায় এবং সকলকে তাকে অপহরন করা হয়েছিল মর্মে জানায়।
ভিকটিম তদন্ত কর্মকর্তাদের নিকট তার ভুল স্বীকার করে।
এ সংক্রান্তে অপরাধী ভুল স্বীকার করায় এবং বিষয়টি স্হানীয় ভাবে মিমাংসা করবে বলে ও কারো কোন অভিযোগ না থাকায় দেলোয়ার হোসেন দিপ্তী (৩৭) কে তার স্হানীয় জনাব আলী আহম্মদ এর জিম্মায় প্রদান করা হয়।